টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য(ভিসি) অধ্যাপক ডক্টর মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ বলেছেন, শিক্ষাঙ্গন সবসময়ই ছিল প্রতিবাদ-প্রতিরোধ আর মুক্ত চিন্তার উৎসভূমি। আমাদের তরুণরাই বার বার প্রমাণ করেছে, অন্যায়ের কাছে মাথা নত নয়- বরং সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে সোচ্চার হওয়াই তাদের চেতনা।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান আমাদের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। যেখানে বাংলার মাটি আবারও সাক্ষী হয়েছিল তরুণ শিক্ষার্থী ও জনগণের অনমনীয় প্রতিরোধ ও আত্মত্যাগের। সেই আন্দোলনে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল- যা আমাদের গৌরবময় ইতিহাসের অংশ। আমরা তাঁদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। বুধবার(১৬ জুলাই) জুলাই শহীদ দিবস উপলক্ষে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সেমিনার হলে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা আজ গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি সেইসব শহীদদের- যারা এক অন্যায়-অবিচার আর দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে গিয়ে জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। তাঁদের আত্মত্যাগ আজও আমাদের জাতীয় বিবেককে নাড়া দেয়, আমাদের দায়িত্বশীলতাকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
আজকের এই আলোচনা যেন শুধু অতীত স্মরণের একটি আনুষ্ঠানিকতা না হয় বরং তা হোক একটি আত্ম-সমালোচনার উপলক্ষ। যেখানে আমরা ভাববো আমাদের অবস্থান কোথায়? আমরা কি সত্যিই শহীদদের আদর্শকে বুকে ধারণ করছি? আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হিসেবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ- একটি মুক্ত ও চিন্তাশীল শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তুলতে। যেখানে মুক্ত মত প্রকাশ ও মানবিক মূল্যবোধ চর্চার সুযোগ থাকবে।
ওই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন, শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক ও উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডক্টর মো. ফজলুল করিম। মুখ্য আলোচক ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর কামরুল হাসান মামুন। বিশেষ অতিথি ছিলেন জুলাই শহীদ মারুফের মা মোর্শেদা বেগম।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণ উদযাপন কমিটির সদস্য-সচিব অধ্যাপক ডক্টর দেলোয়ার জাহান মলয়।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডক্টর মো. মতিউর রহমান, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডক্টর একেএম মহিউদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডক্টর মো. ইমাম হোসেন। আহত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন, আন্দোলনে আহত মনিরুল ইসলাম ও আশরাফুল আলম হৃদয়।
পরে শহীদের মায়ের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়। আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।